কাগজের শিল্প ওরিগামি
নিজস্ব প্রতিবেদক
আমরা ছোট বেলায় কাগজ দিয়ে প্লেইন (বিমান) কিংবা নৌকা বানাইনি এমন লোক খুঁজে পাওয়া আসলেই কষ্টকর। যদিও এসব আমরা বানাতাম আরেকজনের দেখানো পথে, জাস্ট ইন্সট্রাকশন অনুসরন করে।
কিন্তু আমরা হয়তো জানতাম না যে এটি অনেক বড় একটি শিল্প। এটা নিয়ে এমনকি পড়াশোনাও হয় অনেক জায়গায়। কাগজ দিয়ে দিয়ে শুধু বিমান আর নৌকা বানায় না । অনেকে এই কাগজ দিয়ে প্রায় যেকোন কিছু বানিয়ে ফেলতে পারে। কাগজ দিয়ে যে এতো কিছু বানানো যায় তা না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না।
এই কাগজের শিল্পের একটা সুন্দর নাম আছে। শিল্পটির নাম ”ওরিগামি” । ওরিগামি(Origami) শব্দটি এসেছে জাপান থেকে। Ori শব্দের অর্থ Folding(ভাজ করা), Kami শব্দের অর্থ Paper(কাগজ)। কামি থেকে পরবর্তিতে কিভাবে গামি হল তা জানা যায়নি।
ওরিগামি জাপানের একটি ট্রাডিশনাল আর্ট। এটি বহির্বিশ্বে জনপ্রিয় হয় ১৯৯০ এর মধ্যভাগে। এই শিল্পের মুল কথা হছে কাগজকে ভাজ করে কোনো কিছু তৈরি করতে হবে। কাটা-ছেঁড়া কিংবা আঠা লাগানো যাবেনা। আঠা লাগানো কিংবা কেটে কিছু তৈরি করাকে কিরিগামি(Kirigami) বলে। এটা অন্যরকম ওরিগামি। ওরিগামিতে ভাজ করার মুলনীতিটা অনেক কম কিন্তু একে বিভিন্ন ভাবে ভাজ করা যায়। ফলে কাগজের মধ্যে বৈচিত্র্য আসে।
ওরিগামি করার জন্য নির্দিষ্ট সাদা কাগজ ব্যবহার হয়। যা হবে ৬ ইঞ্চি X ৬ ইঞ্চি। এর বাহিরে গেলেও হবে তবে অবশ্যই বর্গাকার কাগজ লাগবে। কিন্তু এটাই স্টান্ডার্ড সাইজ।
এই কাগজের একসাইড প্রইয়োজনে অন্য রঙ থাকে। ওরিগামির কাগজ কিনতে পাওয়া যায়। যদিও বাংলাদেশে পাওয়া যাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। এসব কাগজের প্রকারভেদ রয়েছে। Washi নামে একধরনের কাগজ ব্যবহার হয় জাপানে। এটা অন্যন্য সাধারন কাগজের তুলনায় শক্ত। যা তৈরি হয় গাছের ছাল থেকে।
সাধারনত হাত দিয়েই অরিগামি করা হয় অর্থাৎ কোনো টুলস ব্যবহার করা হয় না। তাই ওরিগামিতে একটা কাগজ ছাড়া আর কিছু প্রয়োজন হয় না। সবচেয়ে বিখ্যাত ওরিগামি হচ্ছে ক্রেন ওরিগামি (CRANE ORIGAMI) । জনপ্রিয় টিভি সিরিজ প্রিজনব্রেকে এই Paper CRANE কে দেখা যায়।
অনেকে মনে করে যে ওরিগামির আসলে সময়ের অপচয়, এছাড়া আর কিছুই না। কিন্তু তারপরোও তো যখন একটা কিছু বানানো সম্ভব হয় তখন নিজের কাছেই অন্যরকম লাগে। ওরিগামি আসলে কঠিন কিছু না। শুধু একবার মূল জিনিষটা ধরে ফেললেই হয়।
প্রতিক্ষণ/এডি/এনজে